Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

গ্রাম আদালত

প্রাচীনকাল থেকেই এদেশে পঞ্চায়েত নামে যে সংস্থা প্রচলিত ছিল।তার অন্যতম প্রধান দায়িত্ব ছিল স্থানীয় বিচার কার্য সম্পাদন ও ঝগড়া-বিবাদের    মীমাংসা করা। বৃটিশরা যদিও প্রথমে এ দায়িত্ব স্থানীয় সংস্থার উপর অর্পন করেনি কিন্তু বিংশ শতাব্দীর প্রথম ভাগেই ১৯১৯ সালে বঙ্গীয় পল্লী স্বায়ওশাসন আইনের মাধ্যামে ইউনিয়ন র্বোডকে দেওয়ানি ও ফৌজদারি উভয় প্রকার মামলার বিচার করার ক্ষমতা  দেওয়া হয় ।

      আমাদের মোট জনসংখ্যার একটা বিশাল অংশ গ্রামে বাস করে। এ       জনগোষ্ঠীর একটি ব্যাপক অংশ দরিদ্র, নিরক্ষর এবং তারা আধুনিক বিচার ব্যবস্থা সর্ম্পকে ওয়াকিবহাল নয়। সবচেয়ে বড় কথা, এ দরিদ্র জনসাধারনের পক্ষে শহরে গিয়ে     দীর্ঘদিন মামলা-মোকদ্দমা চালানো অত্যান্ত কঠিন এবং ব্যয়বহুল ব্যাপার ।

সুতরাং গ্রাম পর্যায়ে যদি ঝগড়া-বিবাদের মীমাংসা বা নিষ্পত্তির ব্যবস্থা থাকে, তাহলে তারা অনেক বিড়ম্বনা ও খরচের হাত থেকে রক্ষা পায় । দ্রুত বিচার কার্যের ফলে ঝগড়া বিবাদের তীব্রতা ও ব্যাপকতা বহুলাংশে কমে যায় এবং গ্রামীন সমাজে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে সাহায্য করে ।

       বর্তমানে বাংলাদেশে বিচার ব্যবস্থার সর্বনিম্ন স্তর হচ্ছে গ্রাম আদালত । গ্রামাঞ্চলের কিছু কিছু মামলার নিষ্পত্তি এবং

তৎসর্ম্পকীয়  বিষয়াবলীর বিচার সহজলভ্য করার উদ্দেশো  গ্রাম  আদালত অধ্যাদেশ, ১৯৭৬  এর আওয়তায়  এ  আদালত  গঠিত  হয়  এবং  এটি  একটি  মীমাংসামুলক   আদালত । ইউনিয়ন  পরিষদের   চেয়ারম্যান ও  সদস্যরা  যেহেতু  এলাকার  সম্মানিত  ব্যক্তি  এবং  জনপ্রতিনিধি  সেহেতু  তাদের  দ্বারা  আসল  ঘটনার  সত্যতা   যাচাই  করে  একটি  শান্তিপূর্ণ   সমাধান  খুঁজে  বের  করাই  গ্রাম  আদালতের  উদ্দেশ্য ।  পরবর্তীতে  ‘’গ্রাম  আদালত  আইন ,  ২০০৬’’  প্রণীত  হয় ।
 

গ্রাম আদালত গঠন
গ্রামআদালত অধ্যাদেশ, ১৯৭৬ অনুযায়ী ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান এবং বাদী ও বিবাদীউভয় পক্ষে দু'জন করে প্রতিনিধি নিয়ে অর্থাত্‍ মোট ৫ জন সদস্য নিয়ে গ্রামআদালত গঠিত হয়৷ উভয়পক্ষের মনোনীত দু'জন বিচারকের মধ্যে একজনকে ইউনিয়নপরিষদের সদস্য হতে হয়৷ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গ্রাম আদালতেরচেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন৷ যদি কোনও কারনে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগ্রাম আদালতের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনে অপারগ হন অথবা তার নিরপেক্ষতানিয়ে প্রশ্ন ওঠে তাহলে থানা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউনিয়ন পরিষদের অন্য কোনওসদস্যকে (যাকে কোনও পক্ষ মনোনীত করেনি) গ্রাম আদালতের চেয়ারম্যান মনোনীতকরেন৷ যদি কোনও পক্ষ ইউনিয়ন পরিষদের কোনও সদস্যকে পক্ষপাতিত্বের কারণেমনোনীত করতে না পারেন তাহলে চেয়ারম্যানের অনুমতিক্রমে অন্য কোনও ব্যক্তিকেগ্রাম আদালতের সদস্য করা যাবে৷
গ্রাম আদালতের এখতিয়ার
গ্রাম আদালত অধ্যাদেশ ১৯৭৬ অনুযায়ী ইউনিয়ন পরিষদ গ্রাম আদালতে ফৌজিদারী ও দেওয়ানী এ দু'প্রকার মামলার বিচার হতে পারে৷
ফৌজদারী বিষয়সমূহ
§বেআইনীজনতারসদস্য হওয়া বা দাঙ্গা-হাঙ্গামায় লিপ্ত (বে-আইনী) জনতার সদস্য সংখ্যা ১০ বাতার কম হতে হবে (ধারা ১৪৩ ও ১৪৭ দঃ বিঃ), সাধারণ আঘাত, অপরাধজনক অনধিকারপ্রবেশ, ক্ষতিকারক কাজ, ক্ষতির পরিমাণ সর্বোচ্চ ৫,০০০ টাকা (ধারা ৩১২, ৪২৭ ও৪৪৭ দঃ বিঃ) হাতাহাতি, বে-আইনি অবরোধ, অবৈধ শক্তি প্রয়োগ, অবৈধ ভয়ভীতিপ্রদর্শন, মাদকাসক্তি, ইঙ্গিতের মাধ্যমে নারীর শ্লীলতাহানি ইত্যাদি (ধারা১৬, ৩৩৪, ৩৪১, ৩৪২, ৩৫৮, ৫০৪ (১ম ভাগ), ৫০৮, ৫০৯ ও ৫১০ দঃ বিঃ);

ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে পাঠালে তিনি তার নিজের কোর্টের রায়মনে করে তা আদায় করে দেবেন এবং অনাদায়ে জেল/জরিমানা হতে পারে৷ ক্ষতিপূরণেরটাকা নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হওয়ার পর বকেয়া টাকা হিসাবে আদায় করা হবে৷